বর্ণপরিচয় (কবিতা) – অপূর্ব দত্ত Bornoporichoy poem Apurba Dutta
ঠিক মনে নেই, তখন বোধহয়, পাঁচ পেরিয়ে ছয়।
চতুর্দিকে অচেনা সব গা ছমছম ভয় ।
মাঝেমধ্যে দাদার খাতা কলম নিয়ে খেলি,
বাবা হেসে বলতো… আবার এইসব কোথায় পেলি?
মনে আছে— সেবার সরস্বতী পুজোর দিনে,
বাবা আনলো শহর থেকে স্লেট পেন্সিল কিনে।
কালিকিংকর জ্যাঠামশাই, পুজো করার পর,
আমায় কোলে দিয়ে বলল, এই নে, এটা ধর।
তাকিয়ে দেখি, স্লেটের উপর, ছোট্ট একটা বই—
আমি বললাম এটা খালাপ বাঘ ভাল্লুক কই?
এই বইটাই দেখেছিলাম, দাদার বইয়ের গাদায়।
মাঝখানে এক ঢ্যাপরা ছবি, লালচে নাকি সাদায়
কথা আমি তখন কি বা বুঝি? পুঁচকে একটা ছেলে।
ওই বয়সে কেউ খুশি হয়? স্লেট পেন্সিল পেলে?
আজকে যখন কাজের ফাঁকে, পিছন ফিরে দেখি,
ঘুমে জাগরণে হঠাৎ, চমকে উঠি। একি?
লাল মলাটের ভিতর থেকে, আসছে পাখা খুলে—
মাধব,ভুবন,অভয়,নবীন হাজার দামাল ছেলে,
হাসতে হাসতে আসছে ওরা, ভাসছে খুশির বেলায়,
ভাসতে ভাসতে উঠছে মেতে, আকার এ কার খেলায়।
হায়রে কবে হারিয়ে গেছে, সেই সে ছোট্টবেলা।
হারিয়ে গেছে মায়ের সঙ্গে, লুকোচুরি খেলা।
হারিয়ে গেছে স্লেট পেন্সিল, দাদার কলম খাতা,
এখন শুধু হাতড়ে বেড়াই, শুকনো স্মৃতির পাতা।
আসবেনা আর, আসবে না সেই, পাঁচ পেরিয়ে ছয়।
সাগর থেকে কুড়িয়ে আনি, বর্ণপরিচয়।