মহিষাসুর মরে না (কবিতা) – শুভ দাশগুপ্ত
বছর বছর আশ্বিনে মহালয়ার পূর্ণ স্তোত্র বাতাসে ভেসে যায়—
কাশফুলেরা ঢেউ তোলে মাঠের পর মাঠ জুড়ে।
বছর বছর ঢাকীরা ঢাক বজায়
আলোয় আলোয় ভোরে ওঠে গ্রাম শহর মফস্বল।
নতুন আনন্দে হাসিতে গানে মেতে ওঠে দেশ।
মা আসেন।
দশভুজা দুর্গতিনাশিনী ত্রিশুলে বিদ্ধ করেন
মহিষাসুরকে। প্রতিবছর।
অসুর মরে না। মরেও মরে না।
প্রতিবছর আবার বেঁচে ওঠে।
আবার মা জগজ্জনোনিকে ত্রিশুল হাতে ভীষণ প্রচন্ডা রূপে জাগ্রত হতে হয়।
আবার মহিষাসুর এর বুকে গেঁথে যায় ত্রিশুল।
তবু মরে না অসুর।
আসলে—
বছরে চারদিন আমরা মা দূর্গা কে ডাকি।
বাকি তিনশো একসট্টি দিন
অসুর দের সঙ্গেই থাকি। তাঁদের সামনে মাথা নিচু করি।
তাদের আস্ফালনকে ভয় পাই।
তাদের ধ্বংস ও সন্ত্রাসকে সমীহ করি। তাদের ভয়ে আমরা কুঁকড়ে থাকি।
বছর বছর তাই
অসুররা মরেও মরে না। ফের বেঁচে ওঠে।
বারবার বেঁচে ওঠে পাড়ায়, গ্রামে, মহল্লায়, শহরে নগরে বন্দরে। মাঠে প্রান্তরে।
আমরা পূজা করি না, উৎসব করি
আমরা মন্ত্র বলি না – উল্লাস করি আমরা হৃদয়ে দেবী কে আহ্বান করি না
মনের গ্লানি আর পাপকে নতুন জামাকাপড়ে ঢেকে রাখি।
তাই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে বছর বছর ‘প্রতিমা’ আসে।
মা আসেন না।
অসুরও মরে না।