পৃথিবীটা একটাই দেশ হোক (কবিতা) – ভবানীপ্রসাদ মজুমদার
নিঃস্ব বিশ্বভূমি, আর তুমি হোয়ো নাকো ক্ষুণ্ণ
এ-মাটি সবার ‘মা’-টি, স্বর্গের চেয়ে খাঁটি পুণ্য।
মুছে দাও মন থেকে সব ভয়, সংশয়-লজ্জা
গড়ে তোলো সকলেরই বুকে সুখে শান্তির শয্যা।
দূর করো অতীতের তিক্ততা-রিক্ততা-দুঃখ
আঁকো মধু-মন্তরে অনুভূতি অন্তরে সূক্ষ্ম।
ঘুচে যাক হা-হুতাশ, লোভ-ক্ষোভ, পাপ-তাপ-চিহ্ন
নেই লাভ বেঁচে থাক প্রেম-প্রীতি সুর-গীতি ভিন্ন
উল্লাসে ফুল হাসে, ভুল নাশে, কূল ভাসে চিত্তে
ভাঙো হিংসার হুল, শোষণের শূল-মূল মিথ্যে।
জীবনের সব জেদ, জাতপাত-ভেদাভেদ, দ্বেষ-রেষ শেষ হোক
আলো-আশা ভালোবাসা দিয়ে ঠাসা পৃথিবীটা একটাই দেশ হোক।
নিঃস্ব বিশ্বভূমি, আর তুমি হোয়ো নাকো ক্ষুণ্ণ
হিসেবের খাতা খুলে দেখি ফাঁকা, আঁকা শুধু শূন্য।
দূর হোক দুর্যোগ, দুর্দশা-দুর্ভোগ-অঘটন
অপরাধ-অপবাদ, অনাচার – অনাহার-অনটন
সকলেরই মনে যেন মিলনের সুর ফোটে, দেখো তা
এক জাতি, এক প্রাণ, এক দেহ, এক মন একতা।
সব্বাই ভাই-ভাই, এক দেশ, এক ঠাঁই বিশ্ব
থাকবে না ভেদাভেদ, খেদ-জেদ, দীন-হীন-নিঃস্ব
ভুলে মিছে জাতপাত, বাড়িয়েই দু’টি হাত দেতো-রে
শুনি সুর সুমধুর, হৃদয়ের বাইরে ও ভেতরে।
জীবনের সব জেদ, জাতপাত-ভেদাভেদ, দ্বেষ-রেশ শেষ হোক
আলো-আশা ভালোবাসা দিয়ে ঠাসা পৃথিবীটা একটাই দেশ হোক।
নিঃস্ব বিশ্বভূমি, আর তুমি হোয়ো নাকো ক্ষুণ্ণ
ভেঙে বাঁধ হতাশার, করো সাধ সকলেরই পূর্ণ।
ঘুচে যাক রোগ-শোক, মুছে যাক দ্বেষ-দ্বিধা-দ্বন্দ্ব
দোস্তিতে-স্বস্তিতে-বস্তিতে মস্তির ছন্দ।
স্নেহ-মায়া-মমতার, সংহতি-সমতার বন্ধন
নন্দিত— বন্দিত— ছন্দিত জীবনেরই চন্দন।
এনো প্রাণে তৃপ্তির-দৃপ্তির-দীপ্তির প্রেরণা
শ্রান্তিতে-ভ্রান্তিতে শান্তির পথ কেউই ছেড়ো না।
লাঞ্ছিত-মন দাও বাঞ্ছিত-স্বপ্নেতে ভরিয়ে
হাসনুহানার হাসি যাক সুখে বুকে-মুখে ছড়িয়ে।
জীবনের সব জেদ, জাতপাত-ভেদাভেদ, দ্বেষ-রেশ শেষ হোক
আলো-আশা ভালোবাসা দিয়ে ঠাসা পৃথিববীটা একটাই দেশ হোক।