শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা – ভাস্কর চক্রবর্তী
শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা আমি তিনমাস ঘুমিয়ে থাকবাে – প্রতি সন্ধ্যায়
কে যেন ইয়ার্কি করে, ব্যাঙের রক্ত
ঢুকিয়ে দ্যায় আমার শরীরে — আমি চুপ করে বসে থাকি – অন্ধকারে
নীল ফানুস উড়িয়ে দ্যায় কারা, সারারাত বাজি পােড়ায়
হৈ-হল্লা – তারপর হঠাৎ
সব মােমবাতি ভােজবাজির মতাে নিবে যায় একসঙ্গে – উৎসবের দিন।
হাওয়ার মতাে অন্যদিকে ছুটে যায়, বাঁশির শব্দ
আর কানে আসে না – তখন জল দেখলেই লাফ দিতে ইচ্ছে করে আমার
মনে হয় – জলের ভেতর – শরীর ডুবিয়ে
মুখ উঁচু করে নিশ্বাস নিই সারাক্ষণ ভালাে লাগে না সুপর্ণা, আমি
মানুষের মতাে না, আলাে না, স্বপ্ন না – পায়ের পাতা
আমার চওড়া হয়ে আসছে ক্রমশ – ঘােড়ার ক্ষুরের শব্দ শুনলেই
বুক কাপে, তড়বড় নিশ্বাস ফেলি, ঘড়ির কাঁটা
আঙুল দিয়ে এগিয়ে দিই প্রতিদিন – আমার ভালাে লাগে না — শীতকাল
কবে আসবে সুপর্ণা আমি তিনমাস ঘুমিয়ে থাকবাে
একবার ভােরবেলা ঘুম থেকে উঠেই মেঘ ঝুঁকে থাকতে দেখেছিলাম
জানলার কাছে – চারিদিকে অন্ধকার ।
নিজের হাতের নখও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলাে না সেদিন – সেইদিন
তােমার কথা মনে পড়তেই আমি কেঁদে ফেলেছিলাম — চুলে, দেশলাই জ্বালিয়ে
চুল পােড়ার গন্ধে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আবার —
এখন আমি মানুষের মতাে না – রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
হঠাৎ এখন লাফ দিতে ইচ্ছে করে আমার – ভালােবাসার কাছে, দীর্ঘ তিনমাস
আর মাথা নিচু করে বসে থাকতে ভালাে লাগে না – আমি
মানুষের পায়ের শব্দ শুনলেই ।
তড়বড়ে নিশ্বাস ফেলি এখন – যে-দিক দিয়ে আসি, সে-দিকেই দৌড় দিই।
কেন এই দৌড়ে যাওয়া? আমার ভালাে লাগে না।
শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা, আমি তিনমাস ঘুমিয়ে থাকবাে।