Bolo tare bolo Oshomapto kobita অসমাপ্ত – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বোলো তারে, বোলো-
এতদিনে তারে দেখা হল।
তখন বর্ষণশেষে ছুঁয়েছিল রৌদ্র এসে
উন্মীলিত গুল্মোরের থোলো।
বনের মন্দির-মাঝে তরুর তম্বুরা বাজে,
অনন্তের উঠি স্তবগান-
চক্ষে জল বহে যায়, নম্র হল বন্দনায়
আমার বিস্মিত মনপ্রাণ।।
দেবতার বর
কত জন্ম, কত জন্মান্তর,
অব্যক্ত ভাগ্যের রাতে লিখেছে আকাশ-পাতে
এ দেখার আশ্বাস-অক্ষর!
অস্তিত্বের পারে পারে এ দেখার বারতারে
বহিয়াছি রক্তের প্রবাহে।
দূর শূন্যে দৃষ্টি রাখি আমার উন্মনা আঁখি
এ দেখার গূঢ় গান গাহে।।
বোলো আজি তারে-
‘চিনিলাম তোমারে আমারে।
হে অতিথি, চুপে চুপে বারম্বার ছায়ারূপে
এসেছ কম্পিত মোর দ্বারে।
কত রাত্রে চৈত্রমাসে প্রচ্ছন্ন পুষ্পের বাসে
কাছে-আসা নিশ্বাস তোমার
স্পন্দিত করেছে জানি আমার গুণ্ঠনখানি,
কাঁদায়েছে সেতারের তার।’
বোলো তারে আজ-
‘অন্তরে পেয়েছি বড়ো লাজ।
কিছু হয় নাই বলা, বেধে গিয়েছিল গলা,
ছিল না দিনের যোগ্য সাজ।
আমার বক্ষের কাছে পূর্ণিমা লুকানো আছে,
সেদিন দেখেছ শুধু অমা।
দিনে দিনে অর্ঘ্য মম পূর্ণ হবে প্রিয়তম-
আজি মোর দৈন্য কোরো ক্ষমা।’