সোমলতাকে (কবিতা) – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
সীমন্তিনী, তোমায় ডেকে পাইনি সাড়া
দুয়ার ঘিরে ছিলো হাজার কাঁটার বেড়া
কেনো তবে বনের পথে সীমন্তিনী
কেনো তবে এই কুয়াশায় সীমন্তিনী
একলা এলে পথ হারালে –
বনের পথে কেনো আমায় পথ ভোলালে… সীমন্তিনী।
সীমন্তিনী, এখন তোমার চোখের আঁচে
দু’টি ভুরুর মধ্যিখানে গনগনে লাল সিঁদুর আঁচে
উড়ে পুড়ে খাক হলো সব রাত্রিদিবস
সীমন্তিনী –
প্রিয় কাফের তোমার প্রেমে আজও বিবশ।
সোমলতা – কুয়াশাবৃতা…
নদীর ওপারে ঘন কুয়াশায়,কুয়াশার ফুল কুড়াতে এলে
মাঝখানে আজ বহমান পানি, রচে ব্যবধান
রচে ব্যবধান তোমার আমার, রচে ব্যবধান দুই বাংলার
তাই কি এলে?
ওপারের মেয়ে সব কাজ ফেলে তাই কি এলে?
কুয়াশার সেতু বাঁধবে বলে তাই কি এলে?
রেলগাড়ি ওই চলে গেলো শোনো রাত্রি চিড়ে
কথা ডুবে গেলো অতল তিমিরে
অপলক তুমি চেয়ে আছো মুখে অপরিচিতা
কুয়াশায় গড়া অলীক মানবী – কুয়াশাবৃতা
ভেঙ্গে ভেঙ্গে যায় কুয়াশার সেতু, উঠেছে হাওয়া
মুহূর্ত জাল ছিড়ে চলে গেলে কল্প কায়া
পাগল হাওয়া – রক্তে জোয়ার হলো দূর্বার তোমাকে চাওয়া
কাফের তোমাকে ভালোবাসলাম বলে
ছায়া মরে গেলো, তারা নিভে গেলো
সাগর উঠলো জ্বলে
মহাকাশ জুড়ে উল্কা বৃষ্টি, শিহরিত হলো সকল সৃষ্টি
পাহাড় পরলো টলে
এ দুঃসময়, ঘোর প্রলয় – কেবল তোমাকে ভালোবাসলাম বলে।
কাফের তোমাকে ভালোবাসলাম বলে
অকাল বোধনে বসন্ত এলো
কৃষ্ণচূড়া অবনত হলো ফুলে
চরাচর জুড়ে এলো হাওয়া উত্তাল
নাচে ধমনীতে শোণিতের স্রোতে
উত্তাল মহাকাল
কাফের তোমাকে ভালোবাসলাম বলে।