Bashonti poem lyrics বাসন্তী কবিতা – কাজী নজরুল ইসলাম
কুহেলীর দোলায় চ’ড়ে
এলো ঐ কে এলো রে?
মকরের কেতন ওড়ে
শিমুলের হিঙুলে বনে।
পলাশের গেলাস – দোলা
কাননের রংমহলা,
ডালিমের ডাল উতলা
লালিমার আলিঙ্গনে।।
না যেতে শীত – কুহেলী
ফাগুনের ফুল – সেহেলি
এলো কি? রক্ত – চেলী
করেছে বন উজালা।
ভুলালি মন ভুলালি
ওলো ও শ্যাম – দুলালী
তমালে ঢাললি লালী
নীলিমার লাল দেয়ালা।।
ওলো এ ব্যস্ত – বাগীশ
মাধবের নকল – নবীশ
মধুরাত নাই হ’তে- ইস্
মাধবীর কুঞ্জে হাজির !
বলি ও মদন – মোহন!
না যেতে শীতের কাঁপন
এলে যে, থালায় এখন
ভরিনি কুমকুম আবীর।।
হা – রা – রা হোরীর গীতে
মাতি নি আজও শীতে
অধরের পিচকিরিতে
পুরিনি গানের হিঙুল।
গাহে নি কোয়েল সখি-
‘মর লো গরল ভখি !’
এখনি শ্যাম এলো কি
আসেনি অশোক শিমুল।।
ওলো দ্যাখ্ শ্যামের পিছে
এসেছে কে এসেছে
দুলে কার চেলীর লালী!
তখনি বলেছি ভাই
আমাদের এ মান বৃথাই,
এলে শ্যাম আসবেনই রাই-
শ্রীমতী শ্যাম্ দুলালী।।
পউষের রিক্ত শাখায়
বঁধূ যেই বংশী বাজায়
নীল বন লাল হয়ে যায়
ফুলে হয় ফুলেল আকাশ।
এলে শ্যাম বংশী – ধারী
গোপনের গোপ – ঝিয়ারী
ফুল সব শ্যাম – পিয়ারী
ভুলে যায় ছার গেহ – বাস।।
সাতাসে – মাঘ – বাতাসে
যদি ভাই ফাগুন আসে
আঙনে রঙন হাসে
আমাদের সেই তো হোরি!
শ্রীমতীর লাল কপোলে
দোলে লো পলাশ দোলে
পায়ে তার পদ্ম ড’লে
দে লো বন আলা করি।।