Chandalika poem lyrics চণ্ডালিকা কবিতা – সব্যসাচী দেব
মা, দিগন্তে তাকিয়ে দেখ
রক্তিম মেঘে সর্বনাশের আভাস,
ওই সর্বনাশের আগুন পেরিয়ে
আমার দুয়ারে এসে দাঁড়ায়নি কোনো আনন্দ,
অঞ্জলি পেতে কেউ বলেনি- ‘জল দাও’।
সারাজীবন আমাকেই তীব্র পিপাসায়
চিৎকার করতে হয়েছে- জল দাও, জল দাও।
চৈত্রের মধ্য দুপুরে পাখিরাও ডানা গুটিয়ে নেয়,
দূর শহরের রাস্তায় বাবুদের ভিড় নেই,
গাঁয়ের কুকুরগুলি ঢুকে যেতে চায় উঠোনের ছায়ায়;
আমাকে এখন যেতে হবে দূর নদীর চড়ায়,
বালি খুঁড়ে তুলে আনতে হবে ফোঁটা ফোঁটা জল,
তারপর ফিরে আসব খরায় ফাটা মাঠ, শুকনো পুকুর
আর টলটলে জলে ভরা নতুন ইঁদারার পাশ দিয়ে-
বাবুদের ইঁদারা ;
তৃষ্ণায় ডুবে যায় আমাদের গোটা গাঁ,
কুকুর আর মানুষের জিভ ঝুলে পড়ে,
আর বাবুদের ইঁদারায় বাবুদের ছেলেদের স্নান;
আমাদের শরীর জ্বলে যায় চৈত্রের খরায়।
মা, আমি এক চণ্ডালিকা;
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, রাঢ়ের হা-হা করা মাঠ ফাটিয়ে,
বিহারের তপ্ত প্রান্তর চিরে আমি চিৎকার করছি
জল দাও।
আর আমার সারা শরীরের রক্ত উঠে আসছে মাথায়।
মা, একফোঁটা জলের দাম আমাদের গোটা জীবন।