Aparajita kobita lyrics Chandan Nath অপরাজিতা কবিতা – চন্দন নাথ
জানো মা, আমি না কবিতা লিখেছি,
তোমরা পড়বে কি তা?
মা’র কাছে গিয়ে খাতা মেলে ধরে
ছোট্ট অপরাজিতা।
রাগী চোখ মেলে মা তাকে বলেন
“মাথা কি খারাপ হলো?
ছাই-পাঁশ সব না লিখে
বরং অঙ্কের খাতা খোলো।”
মুখ ভার করে গুটি গুটি পায়ে
গেলো সে বাবার কাছে
কবিতা লিখেছি, ও বাবা, তোমার
দেখার সময় আছে?
মুখটি না তুলে বললেন বাবা
কবিতা লিখেছো, বেশ…
পড়বো তো বটেই,
আগে খবরের কাগজটা করি শেষ।
অগত্যা গেলো দিদিটির কাছে
ডাকলো সে – দিদি আয়…
“দেখ না কেমন ছবিটা এঁকেছি
ছোট্ট এ কবিতায়।”
দিদির দুচোখ টিভি-পর্দায়
ঝলমলে রোশনাই,
বললো, ‘কবিতা তুই লিখেছিস
কবিতা, না ওটা ছাই।’
অপরাজিতার চোখ ছল-ছল,
বুকে কান্নার ঢেউ,
তার লেখা এই প্রথম কবিতা
দেখলো না পড়ে কেউ।
একা ঘরে ব’সে সামনে তাকালো
মালাতে সাজানো ছবি,
স্নিগ্ধ দুচোখে রয়েছেন চেয়ে
সহজপাঠের কবি।
কবিতার খাতা মেলে সে ধরলো
ঠোঁট দুটি থরো-থরো,
বললো – ঠাকুর, কেউ না পড়ুক
তুমি এ কবিতা প’ড়ো।
কি জানি কি ক’রে কি যে হয়ে গেলো
এ-কথার সাথে সাথে,
রবিঠাকুরের মালা থেকে ফুল
ঝরলো সে খাতটিতে।
মনে হলো তার সামনে দাঁড়িয়ে
বুঝি রবীন্দ্রনাথ,
মাথার উপরে রাখলেন তাঁর
আদর-মাখানো হাত।