ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (কবিতা) – মণিভূষণ ভট্টাচার্য

প্রিয়জনের কাছে শেয়ার করুন :—

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (কবিতা) - মণিভূষণ ভট্টাচার্য Iswar Chandra Bidyasagor kobita Manibhushan Bhattacharya

 

এখনো পূর্ণিমা রাত্রে আলো হয়। আলোর স্বভাবে

স্খলিত তরঙ্গধ্বনি বুনো ঝোপে কিংবা চূর্ণ পাথরের দেশে

ছিন্নভিন্ন জনপদে; বস্তিতে আসল অন্ধকারে

ধনুষ্টঙ্কারের বীজ বেড়ে ওঠে, কারণ শতাব্দী জুড়ে বাঘা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী

কয়েকটি কুটিল অশ্ব রেখে গিয়েছিল, ব্যক্তি কিংবা শ্রেণীগতভাবে আজ,

মনে হয়, তথ্যগুলি ধরা পড়ে গেছে। আর ঠিক সেই ক্ষণে

চোয কাগজের মত স্তরে স্তরে জমাট বণিকী অন্ধকারে

কলকাতার আংশিক উত্থান ;যেন সমগ্রের প্রতিভাস নিয়ে,

কেবল পড়ে না ধরা অপুষ্ট শিশুর চোখে ধীরে ধীরে পোহালে শর্বরী

বণিকের মানদণ্ড দেখা দিল রাজদণ্ডরূপে : তুমি, মানসযাত্রায়

উৎকণ্ঠার প্রতিনিধি : কর্মঠ কব্‌জির নীচে ঘাম জমে, অশ্রু ও স্বপ্নের

সমুদ্রে উত্থিত এক কঠিন প্রবাল দ্বীপ : চতুর্দিকে জাগরণ স্রোতে

ভাসমান বাণিজ্যতরণী, সংঘ কিংবা প্রতিষ্ঠানহীন সেই জ্যোৎস্নার গঠনে

নির্মিত মানুষ আর মানুষের প্রাণের জাহ্নবী

তুমি সেই প্রাণপুরুষের নেতা, কিংবা নেতা নয়, নবীন প্রণেতা

আপন স্বভাব ঘিরে জেগে ওঠো, স্তব্ধ হয় স্বভাবের সীমা

তখনই পর্বতমালা অতিক্রম করে দূর অরণ্যসীমার

শতাব্দী শশাঙ্ক হয়ে ঢলে পড়ে, যদিও তা অষ্টমীর চাঁদ-

তবু তারই অবসানে ঊষার সঞ্চার, সম আয়তনে সেই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের চতুর্দিকে

জনস্রোত, দিনযাপনের শক্তি, প্রকাশ্যে বীরত্বহীন বিরক্ত বীরের রক্তধারা-

ইতস্তত অপসৃত অন্ধকারে মুর্গীচোর শেয়ালের পদধ্বনি—আর

কেবল পূর্ণিমা-শেষে স্যাঁতস্যাঁতে লোকালয়ে তোমার ক্ষমতা, ঘরে ঘরে

স্বল্পায়ু শিশুর হাতে বর্ণপরিচয়, মলাটে অস্পষ্ট চিত্র, আলেখ্যদর্শন।

 

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

কবিকল্পলতা অনলাইন প্রকাশনীতে কবিতার আড্ডায় আপনার স্বরচিত কবিতা ও আবৃত্তি প্রকাশের জন্য আজ‌ই যুক্ত হন।