সেদিন এ-ধরণীর সবুজ দ্বীপের ছায়া—উতরোল তরঙ্গের ভিড় মোর চোখে জেগে-জেগে ধীরে-ধীরে হ’লো অপহত কুয়াশায় ঝ’রে পড়া আতসের মতো। দিকে-দিকে ডুবে গেল কোলাহল, সহসা উজানজলে ভাটা গেল ভাসি, অতিদূর আকাশের মুখখানা আসি বুকে মোর তুলে গেল যেন হাহাকার। সেইদিন মোর…
বেলা ব’য়ে যায়, গোধূলির মেঘ-সীমানায় ধূম্রমৌন সাঁঝে নিত্য নব দিবসের মৃত্যুঘণ্টা বাজে, শতাব্দীর শবদেহে শ্মশানের ভস্মবহ্নি জ্বলে; পান্থ ম্লান চিতার কবলে একে-একে ডুবে যায় দেশ জাতি সংসার সমাজ; কার লাগি, হে সমাধি, তুমি একা ব’সে আছো আজ— কি এক বিক্ষুব্ধ…
তুমি তা জানো না কিছু—না জানিলে, আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে; যখন ঝরিয়া যাবো হেমন্তের ঝড়ে’— পথের পাতার মতো তুমিও তখন আমার বুকের ’পরে শুয়ে রবে? অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন সেদিন তোমার! তোমার এ জীবনের ধার…
মাঠ থেকে মাঠে-মাঠে—সমস্ত দুপুর ভ’রে এশিয়ার আকাশে-আকাশে শকুনেরা চরিতেছে; মানুষ দেখেছে হাট ঘাঁটি বস্তি; নিস্তব্ধ প্রান্তর শকুনের; যেখানে মাঠের দৃঢ় নীরবতা দাঁড়ায়েছে আকাশের পাশে আরেক আকাশ যেন—সেইখানে শকুনেরা একবার নামে পরস্পর কঠিন মেঘের থেকে; যেন দূর আলো ছেড়ে ধূম্র…
একটি পয়সা আমি পেয়ে গেছি আহিরীটোলায়, একটি পয়সা আমি পেয়ে গেছি বাদুড়বাগানে, একটি পয়সা যদি পাওয়া যায় আরো— তবে আমি হেঁটে চ’লে যাবো মানে-মানে। —ব’লে সে বাড়ায়ে দিলো অন্ধকারে হাত। আগাগোড়া শরীরটা নিয়ে এক কানা যেন বুনে যেতে চেয়েছিলো…
বাংলার অঙ্গনেতে বাজায়েছ নটেশের রঙ্গমল্লী গাঁথা অশান্ত সন্তান ওগো, বিপ্লবিনী পদ্মা ছিল তব নদীমাতা। কাল বৈশাখীর দোলা অনিবার দুলাইতে রক্তপুঞ্জ তব উত্তাল ঊর্মির তালে-বক্ষে তবু লক্ষ কোটি পন্নগ-উৎসব উদ্যত ফণার নৃত্যে আষ্ফালিত ধূর্জটির কন্ঠ-নাগ জিনি, ত্র্যম্বক-পিনাকে তব শঙ্কাকুল ছিল সদা…