দেখলুম, তুমি কী রকম আমার ঘাসের জমি থেকে বাতাসের ধাপে-ধাপে চরণ ঠেকিয়ে অদৃশ্য মিনারে উঠে গেলে। দেখলুম তুমি সেই মিনার-চুড়োয় সােনলি মেঘের তুলি দু-গালে বুলিয়ে নিয়ে সূর্যের আঙুল ছুঁয়ে শপথ জড়ালে আর আমি অকস্মাৎ পাহাড়ি রাস্তায় ধ্বসের…
দু’হাত বাড়িয়ে বললুমঃ -“কে আছো? কোলে নাও।” তুমি কোলে নিলে। কিন্তু আমি ক্রমশ বামনের অনাদ্যন্ত ত্রিপাদ আমি উত্তরােত্তর পবনপুত্রের অমােঘ অনড় পুচ্ছ আমি/ তােমার কোল ছাড়িয়ে… বুক মাড়িয়ে…পাঁজর গুড়িয়ে… দুর্বার ছড়িয়ে পড়লুম বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে রেণু রেণু হয়ে মিলিয়ে গেলে তুমি…
সেতুগুলো ভেঙে যাচ্ছে ? নাকি ভেঙে ফেলেছি নিজেই ? চোখের মণিতে কিছু সংক্রামক অসুখ করেছে ? সাক্ষাতে কাছের লােকও অকস্মাৎ দূর হয়ে যায়। বড়ো অস্পষ্ট দেখায়। আমি কি বিদেশে আছি ? অথবা কি আমিই বিদেশ ? তােমরা কি সেতু ভেঙে…
রথের মেলায় তুমি বলেছিলে সঙ্গে নিয়ে যাবে । আমি ভেঁপু কিনবাে রঙচঙে, রথ কিনবাে দুটো ঘােড়া জোতা, হাঁড়িকুঁড়ি, বুড়ােবুড়ি, কাঁচকড়ার মেমপুতুল, মুখােশ। হাটসুদ্ধ, কিনে ফেলবে। এত লম্বা ফর্দ বানিয়ে, আমি একখুবি পয়সা জমিয়ে বসে রইলুম দাওয়ায় তুমি ফিরে এসে সঙ্গে…
সছিদ্র গেঞ্জির মতাে অবিকল স্বচ্ছন্দে, হৃদয় খুলে ফেলে দিয়ে গেলে ভালােবাসা, শপথ, মমতা- পরে’ নিলাে শনিবারে চেতলার হাট থেকে কেনা নতুন গামছার মতাে রঙ্ দার উচ্ছল প্রণয়। ভালােবাসা, ছিলি রাতের ঊর্মিমালা ফস্ফরাসের উজ্জ্বল উষ্ণীষ – ভালােবাসা, হলি দহন দুঃখজ্বালা সহমরণের…
ডাকলে আসে। পােষা কাকাতুয়ার মতাে আঙুলে এসে বসে। ফরফরায় । ঘাড় দুলিয়ে, পলখ ফুলিয়ে, ঝুঁটি নাচিয়ে বুলি কপচায়। মন-রাখা বোল পড়ে আমার ধবধবে পাখি, আমার মন-রাখা যত বুলি, যত শেখানাে-পড়ানাে বুলি, আমার কানে মধু ঢালে। তারপর আড়ালে একা দাঁড়ে বসে-ব’সে…