Noshto kobir sardho kothay নষ্ট কবির সাধ্য কোথায় আনিসুল হক
আমাকে যে হাসতে বলো, হাসিখুশি থাকতে বলো,
নিজকে সুখী ভাবতে বলো, কেমন করে রাখবো তোমার কথা?
আমার তো আর পাখাটি নেই মেঘের মতো
ইচ্ছে হলেই হয়ে যাবো আকাশচারী
চাঁদের সাথে ঠোঁট বাঁকিয়ে গাল ফুলিয়ে কইবো কথা।
আমার পায়ে শিকড় আছে মাটির বুকে গভীর করে প্রোথিত তা।
আমার বুকে জলের ভাঁড়ার, জিভে নিলে নোনতা লাগে,
কেমন করে আমি বলো পাখি হবো?
আমার সময় কালো সময়, আমার সময় জ্যোৎস্নাভ নয়,
শিশু মানেই টোকাই এবং
নারী মানেই শব মেহের বা এসিড দগ্ধ সুফিয়া খাতুন,
আমাকে যে কাব্য করে নারীর কথা বলতে বলো,
কেমন করে এখন আমি কবি হবো?
আমার পাড়ায় যুবক মানে ইমদু কিংবা
তরুণ মানে গাঁজার ধোঁয়ার চিত্রকল্প,
নেতা মানে অ্যামিবা সে ভোল পাল্টায় ভীষণ দ্রুত,
আমার ঘরের দাবার ছকে সান্ত্রিরা সব যে দিক ইচ্ছে যেমন ইচ্ছে
সে দিকে যায়,
রাজা মানে কাঠের ঘুঁটি, পুঁজিবাদের স্বার্থে তিনি নড়েন চড়েন।
আমাকে যে ফুলের সাথে ঘরকন্না করতে বলো
আমি কি আর প্রজাপতি?
সারা বাগান ধু-ধু ফাঁকা, বাতাস জুড়ে সৌরভ কই
বাতাস ভারি বারুদ-গন্ধে
আমাকে যে প্রেমের জন্যে পার্কে রোজই যেতে বলো,
পার্ক তো আর বাগানটি নেই, ঠাঁই নিয়েছে বেশ্যারা সব।
বুকের বরফ গলছে গলুক
অশ্রুগুলো যাচ্ছে ঝরে
ঝরতে দাও।
বাড়ছে মানুষ ভুখা মানুষ
বাড়ছে মানুষ দুঃখী মানুষ
বাড়ছে মানুষ অনাহারে
বাড়ছে মানুষ বাড়ছে মাথা বাড়ছে বাহু
বাড়ছে শ্রমিক বাড়ছে যোদ্ধা
আসন্ন এক যুদ্ধ নিয়ে তৈরি হতে একটুখানি সময় দাও
সুখী কাব্য সুখী পদ্য শুনতে চাও?
এই নষ্ট সময় নষ্ট কবির সাধ্য কোথায় তোমার কথা রাখতে পারে
নতুন দিনের কবির জন্য থকলো তুলে রাখা তোমার চাওয়া।