শিশুর জীবন (কবিতা) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ছোটো ছেলে হওয়ার সাহস আছে কি এক ফোঁটা, তাই তো এমন বুড়ো হয়েই মরি। তিলে তিলে জমাই কেবল জমাই এটা ওটা, পলে পলে বাক্স বোঝাই করি। কালকে-দিনের ভাবনা এসে আজ-দিনেরে মারলে ঠেসে কাল তুলি ফের পরদিনের বোঝা। সাধের জিনিস ঘরে…
ছোটো ছেলে হওয়ার সাহস আছে কি এক ফোঁটা, তাই তো এমন বুড়ো হয়েই মরি। তিলে তিলে জমাই কেবল জমাই এটা ওটা, পলে পলে বাক্স বোঝাই করি। কালকে-দিনের ভাবনা এসে আজ-দিনেরে মারলে ঠেসে কাল তুলি ফের পরদিনের বোঝা। সাধের জিনিস ঘরে…
মাকে আমার পড়ে না মনে। শুধু কখন খেলতে গিয়ে হঠাৎ অকারণে একটা কী সুর গুনগুনিয়ে কানে আমার বাজে, মায়ের কথা মিলায় যেন আমার খেলার মাঝে। মা বুঝি গান গাইত, আমার দোলনা ঠেলে ঠেলে ; মা গিয়েছে, যেতে যেতে গানটি গেছে…
শর ভাবে, ছুটে চলি, আমি তো স্বাধীন, ধনুকটা একঠাঁই বদ্ধ চিরদিন। ধনু হেসে বলে, শর, জান না সে কথা— আমারি অধীন জেনো তব স্বাধীনতা। কাব্যগ্রন্থ: কণিকা।
হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান, অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান। মানুষের অধিকারে বঞ্চিত করেছ যারে, সম্মুখে দাঁড়ায়ে রেখে তবু কোলে দাও নাই স্থান অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান। মানুষের পরশেরে প্রতিদিন ঠেকাইয়া দূরে ঘৃণা করিয়াছ…
আমারে ফিরায়ে লহ অয়ি বসুন্ধরে, কোলের সন্তানে তব কোলের ভিতরে, বিপুল অঞ্চল-তলে। ওগো মা মৃন্ময়ী, তোমার মৃত্তিকা-মাঝে ব্যাপ্ত হয়ে রই; দিগ্বিদিকে আপনারে দিই বিস্তারিয়া বসন্তের আনন্দের মতো; বিদারিয়া এ বক্ষপঞ্জর, টুটিয়া পাষাণ-বন্ধ সংকীর্ণ প্রাচীর, আপনার নিরানন্দ অন্ধ কারাগার, হিল্লোলিয়া, মর্মরিয়া,…
আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরির খেলা। নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা। আজ ভ্রমর ভোলে মধু খেতে, উড়ে বেড়ায় আলোয় মেতে, আজ কিসের তরে নদীর চরে চখাচখির মেলা। ওরে যাবো না আজ ঘরে রে ভাই, যাবো না…