নদীতীরে বৃন্দাবনে সনাতন একমনে জপিছেন নাম, হেনকালে দীনবেশে ব্রাহ্মণ চরণে এসে করিল প্রণাম। শুধালেন সনাতন, ‘কোথা হতে আগমন, কী নাম ঠাকুর?’ বিপ্র কহে, ‘কিবা কব, পেয়েছি দর্শন তব ভ্রমি বহুদূর। জীবন আমার নাম, মানকরে মোর ধাম, জিলা বর্ধমানে— এতবড়ো ভাগ্যহত…
বহে মাঘমাসে শীতের বাতাস, স্বচ্ছসলিলা বরুণা। পুরী হতে দূরে গ্রামে নির্জনে শিলাময় ঘাট চম্পকবনে, স্নানে চলেছেন শতসখীসনে কাশীর মহিষী করুণা। সে পথ সে ঘাট আজি এ প্রভাতে জনহীন রাজশাসনে। নিকটে যে ক’টি আছিল কুটির ছেড়ে গেছে লোক, তাই নদীতীর…
দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর, লও যত লৌহ লোষ্ট্র কাষ্ঠ ও প্রস্তর হে নবসভ্যতা! হে নিষ্ঠুর সর্বগ্রাসী, দাও সেই তপোবন পুণ্যচ্ছায়ারাশি, গ্লানিহীন দিনগুলি, সেই সন্ধ্যাস্নান, সেই গোচারণ, সেই শান্ত সামগান, নীবারধান্যের মুষ্টি, বল্কলবসন, মগ্ন হয়ে আত্মমাঝে নিত্য আলোচন…
কাছে তার যাই যদি কত যেন পায় নিধি তবু হরষের হাসি ফুটে ফুটে, ফুটে না। কখন বা মৃদু হেসে আদর করিতে এসে সহসা সরমে বাধে, মন উঠে উঠে না। অভিমানে যাই দূরে, কথা তার নাহি ফুরে, চরণ বারণ-তরে উঠে উঠে,…
রায়বাহাদুর কিষনলালের স্যাকরা জগন্নাথ, সোনারুপোর সকল কাজে নিপুণ তাহার হাত। আপন বিদ্যা শিখিয়ে মানুষ করবে ছেলেটাকে এই আশাতে সময় পেলেই ধরে আনত তাকে; বসিয়ে রাখত চোখের সামনে, জোগান দেবার কাজে লাগিয়ে দিত যখন তখন; আবার মাঝে মাঝে ছোটো মেয়ের পুতুল-খেলার…
আমার যেতে ইচ্ছে করে নদীটির ওই পারে— যেথায় ধারে-ধারে বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকো বাঁধা সারে-সারে। কৃষাণেরা পার হয়ে যায় লাঙল কাঁধে ফেলে; জাল টেনে নেয় জেলে, গরু মহিষ সাঁতরে নিয়ে যায় রাখালের ছেলে। সন্ধে হলে যেখান থেকে সবাই ফেরে…