অক্ষমতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
এ যেন রে অভিশপ্ত প্রেতের পিপাসা — সলিল রয়েছে প’ড়ে, শুধু দেহ নাই। এ কেবল হৃদয়ের দুর্বল দুরাশা সাধের বস্তুর মাঝে করে চাই – চাই। দুটি চরণেতে বেঁধে ফুলের শৃঙ্খল কেবল পথের পানে চেয়ে বসে থাকা! মানবজীবন যেন সকলি…
এ যেন রে অভিশপ্ত প্রেতের পিপাসা — সলিল রয়েছে প’ড়ে, শুধু দেহ নাই। এ কেবল হৃদয়ের দুর্বল দুরাশা সাধের বস্তুর মাঝে করে চাই – চাই। দুটি চরণেতে বেঁধে ফুলের শৃঙ্খল কেবল পথের পানে চেয়ে বসে থাকা! মানবজীবন যেন সকলি…
তোমার আনন্দগানে আমি দিব সুর যাহা জানি দু-একটি প্রীতি-সুমধুর অন্তরের ছন্দোগাথা; দুঃখের ক্রন্দনে বাজিবে আমার কণ্ঠ বিষাদবিধুর তোমার কণ্ঠের সনে; কুসুমে চন্দনে তোমারে পূজিব আমি; পরাব সিন্দূর তোমার সীমন্তে ভালে; বিচিত্র বন্ধনে তোমারে বাঁধিব আমি, প্রমোদসিন্ধুর তরঙ্গেতে দিব দোলা…
ভূতের মতন চেহারা যেমন, নির্বোধ অতি ঘোর। যা-কিছু হারায়, গিন্নি বলেন, “কেষ্টা বেটাই চোর।’ উঠিতে বসিতে করি বাপান্ত, শুনেও শোনে না কানে। যত পায় বেত না পায় বেতন, তবু না চেতন…
আমি যে বেসেছি ভালো এই জগতেরে; পাকে পাকে ফেরে ফেরে আমার জীবন দিয়ে জড়ায়েছি এরে; প্রভাত-সন্ধ্যার আলো-অন্ধকার মোর চেতনায় গেছে ভেসে; অবশেষে এক হয়ে গেছে আজ আমার জীবন আর আমার ভুবন। ভালোবাসিয়াছি এই জগতের আলো …
যাবার দিনে এই কথাটি বলে যেন যাই— যা দেখেছি যা পেয়েছি তুলনা তার নাই। এই জ্যোতিঃসমুদ্র-মাঝে যে শতদল পদ্ম রাজে তারি মধু পান করেছি ধন্য আমি তাই— যাবার দিনে এই কথাটি জানিয়ে যেন যাই। বিশ্বরূপের খেলাঘরে…
দিবস যদি সাঙ্গ হল, না যদি গাহে পাখি, ক্লান্ত বায়ু না যদি আর চলে— এবার তবে গভীর করে ফেলো গো মোরে ঢাকি অতি নিবিড় ঘন তিমিরতলে স্বপন দিয়ে গোপনে ধীরে ধীরে যেমন করে ঢেকেছ ধরণীরে, যেমন করে ঢেকেছ তুমি…